অন্ধকার একটি কামরায় দুই শিশুকে চেপে ধরে আছে কয়েকজন।
বাকীরা মোটা লাঠি দিয়ে তাদের পায়ের তলায় প্রচণ্ড বেগে আঘাত করে চলেছে, আর কিছু একটার স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করছে।
এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের স্থানীয় কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম।
সোয়া এক মিনিটের ভিডিওটি থেকে নির্যাতনের শিকার শিশু দুটির করুণ আর্ত চিৎকার ভেসে আসছিল।
আর শোনা যাচ্ছিল নির্যাতনকারীদের হুমকি।
শিশু দুটির হাত ছিল বাঁধা।
চেহারায় ছিল স্পষ্ট আতংকের চিহ্ন।
পবা উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে গত শুক্রবার বিকেলে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে যাদেরকে মারতে দেখা গেছে তাদের একজন সেনাবাহিনীর সদস্য এবং আরেকজন পুলিশের সদস্য বলে অভিযোগ করছেন নির্যাতিত শিশু দুটির একজনের বাবা ইমরান আলী। তারা দুজনেই চৌবাড়িয়ারই বাসিন্দা।
অপর নির্যাতিত শিশুটি পিতৃ-মাতৃহীন বলে জানা যাচ্ছে।
এ ঘটনায় তের জনকে অভিযুক্ত করে গতকাল (শনিবার) বিকেলেই পবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন মি. আলী।
অভিযুক্তদের একজনকে আজ (রবিবার) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানাচ্ছেন পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম।
ভিডিওটিও জব্দ করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে নির্যাতিত শিশু দুটির বয়েস তের বছর।
তাদেরকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের দুজন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্য হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মি. ইসলাম বলছেন, “আমি এ সম্পর্কে মৌখিকভাবে শুনেছি। তারা দুজন ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। দুজনেরই বাড়ি ওই এলাকায়। এ নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।”
এদিকে ইমরান আলী বলছেন, অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাকে নানারকম হুমকি দিচ্ছেন এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য না করবার জন্য।
দেশটিতে গত বছর বেশ কয়েকটি শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
গতবছরের জুলাই মাসে সিলেটে রাজন নামে এক শিশুকে চুরির অপবাদে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করবার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ওই ঘটনার ভিডিও দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার করা হয়।
গত বছর নভেম্বর মাসেই চার জন আসামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।