আসছে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী। এখন থেকেই গুনছেন কে কোথায় কিভাবে কাটাবে বিশ্ব ভালবাসা নামের বেহায়া দিবসটি।
কিন্তু আমরা কি জানি সেই ভেলেন্টাইন্স’ডে বা ভালবাসা দিবসের ইতিহাস কি?
কোথায় থেকে এর উৎপত্তি আদৌ কি জানতে পেরেছি? বা জানার চেষ্টা করেছি?
এটা ইসলামের পক্ষে না বিপক্ষে, একবারও কি চিন্তা করেছি? না, করিনি, একবার ভেবেও দেখিনি।
তাই আসুন জানি, ভালবাসা দিবসের ইতিহাস কি?
ভেলেন্টাইন্স’ ডে। এটা খৃস্টপুর্ব চতুর্থ শতকে সুচনা হয় পৌত্তলিক থেকে। গবেষকদের গবেষণা আর মূল ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ কথা প্রতিয়মান হয় যে, ভালবাসা দিবস মূলত পৌত্তলিক, মূর্তিপূজারীদের সমাজে প্রচলিত ছিল বিভিন্নভাবে। পৌত্তলিকরা বিভিন্ন দেবতাকে পুজা করত। তারা পশু-পাখির জন্যে একটি দেবতা কে কল্পনা করতো। জমি উর্বরতার জন্যে আরেকটি বিশ্বাস করতো। তার নাম হচ্ছে “লুপার কালিয়া”।
এইদেবতার সম্মানে তারা যুবক যুবতীর মধ্যে লটারী দিত। যে যুবকের সাথে যুবতীর নাম উঠতো। এই যুবতীকে আগামী বছর এ দিন আসা পর্যন্ত ঐ যুবক ভোগ করতো। এই অনুষ্ঠানটি তারা পালনকরতো ১৪ ই ফেব্রুয়ারী।
পৌত্তলিকদের পর খৃষ্টধর্ম আবির্ভূত হল, তারা আহলে কিতাব, তাই পৌত্তলিকদের এ জাতীয় কুসংস্কারকে আসমানী ধর্ম হিসেবে সমর্থন করতে পারে নাই। তাই খৃষ্টানরা তারিখ ঠিক রেখে কিছু পরিবর্তন করলো। পৌত্তলিকরা করতো দেবতার পূজা তারা করতে লাগল পাদ্রীর পূজা।তাদের পদ্বতিটা ছিল ভিন্ন। যেমন তারা বালক ও পাদ্রীর মধ্যে লটারী দিত, যে পাদ্রীর সাথে বালকের নাম উঠতো ঐ বালক এক বছর পাদ্রীর ছোহবতে থাকতো।
এর ফলে বালকের চরিত্র ভাল হয় বলে বিশ্বাস ছিল।
তারা ৪৯৬ খৃষ্টাব্দে সে দিবসটির নাম করন করে ভেলেন্টাইন্স’ডে বা ভালবাসা দিবস বলে।
মূল ইতিহাস কি? এ ব্যাপারে অনেক মতামত ও ঘটনা পাওয়া যায়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ইতিহাসটি হচ্ছে,
ঘটনা ১
ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপি এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। অন্যদিকে রোম সম্রাট
দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে ভ্যালেন্টাইন’কে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা
অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই থেকেই দিবসটির সুচনা।
ঘটনা -২
এটাও ভ্যালেন্টাইনকে নিয়েই। ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত।
অনেকক্ষণ ধরে তারা দু’জন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক চিকিত্সায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
ঘ্টনা-৩
খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে, ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের সাম্রাজ্যবাদী, রক্তপিপাষু রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের দরকার এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর। একসময় তার সেনাবাহিনীতে সেনা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু কেউ তার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাজি নয়। সম্রাট লক্ষ করলেন যে, অবিবাহিত যুবকরা যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে অত্যধিক ধৈর্যশীল হয়। ফলে তিনি যুবকদের বিবাহ কিংবা যুগলবন্দী হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। যাতে তারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ না করে।
তার এ ঘোষণায় দেশের যুবক-যুবতীরা ক্ষেপে যায়। যুবক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক ধর্মযাজকও সম্রাটের এ নিষেধাজ্ঞা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। প্রথমে তিনি সেন্ট মারিয়াসকে ভালোবেসে বিয়ের মাধ্যমে রাজার আজ্ঞাকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার গির্জায় গোপনে বিয়ে পড়ানোর কাজও চালাতে থাকেন। একটি রুমে বর-বধূ বসিয়ে মোমবাতির স্বল্প আলোয় ভ্যালেন্টাইন ফিস ফিস করে বিয়ের মন্ত্র পড়াতেন। কিন্তু এ বিষয়টি একসময়ে সম্রাট ক্লডিয়াসের কানে গেলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনকে হাত-পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে সম্রাটের সামনে হাজির করলে তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন।
ঘটনা-৫
খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে, গোটা ইউরোপে যখন খ্রিস্টান ধর্মের জয়জয়কার, তখনও ঘটা করে পালিত হতো রোমীয় একটি রীতি। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে গ্রামের সকল যুবকরা সমস্ত মেয়েদের নাম চিরকুটে লিখে একটি পাত্রে বা বাক্সে জমা করত। অতঃপর ওই বাক্স হতে প্রত্যেক যুবক একটি করে চিরকুট তুলত, যার হাতে যে মেয়ের নাম উঠত, সে পূর্ণবত্সর ওই মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত। আর তাকে চিঠি লিখত, এ বলে ‘প্রতিমা মাতার নামে তোমার প্রতি এ পত্র প্রেরণ করছি।’ বছর শেষে এ সম্পর্ক নবায়ন বা পরিবর্তন করা হতো।
এ রীতিটি কয়েকজন পাদ্রীর গোচরীভূত হলে তারা একে সমূলে উত্পাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে দিয়ে একে খ্রিস্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং ঘোষণা করে এখন থেকে এ পত্রগুলো ‘সেন্ট ভ্যালেনটাইন’- এর নামে প্রেরণ করতে হবে। কারণ এটা খ্রিস্টান নিদর্শন, যাতে এটা কালক্রমে খ্রিস্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। অন্য আরেকটি মতে, প্রাচীন রোমে দেবতাদের রানি জুনোর সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছুটি পালন করা হতো। রোমানরা বিশ্বাস করত যে, জুনোর ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া কোনো বিয়ে সফল হয় না। ছুটির পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি লুপারকালিয়া ভোজ উত্সবে হাজারও তরুণের মেলায় র্যাফে ড্র’র মাধ্যমে সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়া চলত। এ উত্সবে উপস্থিত তরুণীরা তাদের নামাংকিত কাগজের স্লিপ জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে ফেলত। সেখান থেকে যুবকের তোলা স্লিপের তরুণীকে কাছে ডেকে নিত। কখনও এ জুটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী হতো এবং ভালোবাসার সিঁড়ি বেয়ে বিয়েতে গড়াতো ওই সম্পর্ক। ঐ দিনের শোক গাঁথায় আজকের এই ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’। এমন অনেক প্রচলিত ঘটনা, তথ্য-উপাত্ত
পাওয়া যায় ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস নিয়ে। একেকজন একেকভাবে এর যুক্তি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইনস ডে আসল যেভাবে ।
১৯৯৩ সালের দিকে বাংলাদেশে বিশ্ব ভালবাসা দিবসের আর্বিভাব ঘঠে। যায় যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রহমান। তিনি পড়াশোনা করেছেন লন্ডনে। পাশ্চাত্যের ছোঁয়া নিয়ে দেশে এসে লন্ডনী সংস্কৃতির প্র্যাকটিস শুরু করেন। তিনি প্রথম যায় যায় দিন পত্রিকার মাধ্যমে বিশ্ব ভালবাসা দিবস বাংলাদেশীদের কাছে তুলে ধরেন। তেজগাঁওয়ে তার পত্রিকা অফিসে কেউ চাকরী নিতে গেলে না কি সাথে তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে যেতে হতো। প্রেমের যুগললবন্দী কপোত- কপোতীকে দেখে ওনি না কি খুব খুশী হতেন। অভিধা প্রথম ব্যবহার করেন শফিক রেহমান। এজন্য শফিক রেহমানকে বাংলাদেশে ভালবাসা দিবসের জনক বলা হয়।
এবার, মুসলিম সমাজের বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন। এ দিবসটি পালন করা আমাদের জন্য আদৌ কি বৈধ?
প্লীজ, ভাবুন!
চিন্তা করুন!
আমার আপনার মা ভাই বোনকে সাবধান করুন! বিরত রাখুন।
কিন্তু আমরা কি জানি সেই ভেলেন্টাইন্স’ডে বা ভালবাসা দিবসের ইতিহাস কি?
কোথায় থেকে এর উৎপত্তি আদৌ কি জানতে পেরেছি? বা জানার চেষ্টা করেছি?
এটা ইসলামের পক্ষে না বিপক্ষে, একবারও কি চিন্তা করেছি? না, করিনি, একবার ভেবেও দেখিনি।
তাই আসুন জানি, ভালবাসা দিবসের ইতিহাস কি?
ভেলেন্টাইন্স’ ডে। এটা খৃস্টপুর্ব চতুর্থ শতকে সুচনা হয় পৌত্তলিক থেকে। গবেষকদের গবেষণা আর মূল ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ কথা প্রতিয়মান হয় যে, ভালবাসা দিবস মূলত পৌত্তলিক, মূর্তিপূজারীদের সমাজে প্রচলিত ছিল বিভিন্নভাবে। পৌত্তলিকরা বিভিন্ন দেবতাকে পুজা করত। তারা পশু-পাখির জন্যে একটি দেবতা কে কল্পনা করতো। জমি উর্বরতার জন্যে আরেকটি বিশ্বাস করতো। তার নাম হচ্ছে “লুপার কালিয়া”।
এইদেবতার সম্মানে তারা যুবক যুবতীর মধ্যে লটারী দিত। যে যুবকের সাথে যুবতীর নাম উঠতো। এই যুবতীকে আগামী বছর এ দিন আসা পর্যন্ত ঐ যুবক ভোগ করতো। এই অনুষ্ঠানটি তারা পালনকরতো ১৪ ই ফেব্রুয়ারী।
পৌত্তলিকদের পর খৃষ্টধর্ম আবির্ভূত হল, তারা আহলে কিতাব, তাই পৌত্তলিকদের এ জাতীয় কুসংস্কারকে আসমানী ধর্ম হিসেবে সমর্থন করতে পারে নাই। তাই খৃষ্টানরা তারিখ ঠিক রেখে কিছু পরিবর্তন করলো। পৌত্তলিকরা করতো দেবতার পূজা তারা করতে লাগল পাদ্রীর পূজা।তাদের পদ্বতিটা ছিল ভিন্ন। যেমন তারা বালক ও পাদ্রীর মধ্যে লটারী দিত, যে পাদ্রীর সাথে বালকের নাম উঠতো ঐ বালক এক বছর পাদ্রীর ছোহবতে থাকতো।
এর ফলে বালকের চরিত্র ভাল হয় বলে বিশ্বাস ছিল।
তারা ৪৯৬ খৃষ্টাব্দে সে দিবসটির নাম করন করে ভেলেন্টাইন্স’ডে বা ভালবাসা দিবস বলে।
মূল ইতিহাস কি? এ ব্যাপারে অনেক মতামত ও ঘটনা পাওয়া যায়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ইতিহাসটি হচ্ছে,
ঘটনা ১
ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপি এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। অন্যদিকে রোম সম্রাট
দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে ভ্যালেন্টাইন’কে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা
অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই থেকেই দিবসটির সুচনা।
ঘটনা -২
এটাও ভ্যালেন্টাইনকে নিয়েই। ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত।
অনেকক্ষণ ধরে তারা দু’জন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক চিকিত্সায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
ঘ্টনা-৩
খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে, ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের সাম্রাজ্যবাদী, রক্তপিপাষু রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের দরকার এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর। একসময় তার সেনাবাহিনীতে সেনা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু কেউ তার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাজি নয়। সম্রাট লক্ষ করলেন যে, অবিবাহিত যুবকরা যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে অত্যধিক ধৈর্যশীল হয়। ফলে তিনি যুবকদের বিবাহ কিংবা যুগলবন্দী হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। যাতে তারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ না করে।
তার এ ঘোষণায় দেশের যুবক-যুবতীরা ক্ষেপে যায়। যুবক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক ধর্মযাজকও সম্রাটের এ নিষেধাজ্ঞা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। প্রথমে তিনি সেন্ট মারিয়াসকে ভালোবেসে বিয়ের মাধ্যমে রাজার আজ্ঞাকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার গির্জায় গোপনে বিয়ে পড়ানোর কাজও চালাতে থাকেন। একটি রুমে বর-বধূ বসিয়ে মোমবাতির স্বল্প আলোয় ভ্যালেন্টাইন ফিস ফিস করে বিয়ের মন্ত্র পড়াতেন। কিন্তু এ বিষয়টি একসময়ে সম্রাট ক্লডিয়াসের কানে গেলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনকে হাত-পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে সম্রাটের সামনে হাজির করলে তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন।
ঘটনা-৫
খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে, গোটা ইউরোপে যখন খ্রিস্টান ধর্মের জয়জয়কার, তখনও ঘটা করে পালিত হতো রোমীয় একটি রীতি। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে গ্রামের সকল যুবকরা সমস্ত মেয়েদের নাম চিরকুটে লিখে একটি পাত্রে বা বাক্সে জমা করত। অতঃপর ওই বাক্স হতে প্রত্যেক যুবক একটি করে চিরকুট তুলত, যার হাতে যে মেয়ের নাম উঠত, সে পূর্ণবত্সর ওই মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত। আর তাকে চিঠি লিখত, এ বলে ‘প্রতিমা মাতার নামে তোমার প্রতি এ পত্র প্রেরণ করছি।’ বছর শেষে এ সম্পর্ক নবায়ন বা পরিবর্তন করা হতো।
এ রীতিটি কয়েকজন পাদ্রীর গোচরীভূত হলে তারা একে সমূলে উত্পাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে দিয়ে একে খ্রিস্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং ঘোষণা করে এখন থেকে এ পত্রগুলো ‘সেন্ট ভ্যালেনটাইন’- এর নামে প্রেরণ করতে হবে। কারণ এটা খ্রিস্টান নিদর্শন, যাতে এটা কালক্রমে খ্রিস্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। অন্য আরেকটি মতে, প্রাচীন রোমে দেবতাদের রানি জুনোর সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছুটি পালন করা হতো। রোমানরা বিশ্বাস করত যে, জুনোর ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া কোনো বিয়ে সফল হয় না। ছুটির পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি লুপারকালিয়া ভোজ উত্সবে হাজারও তরুণের মেলায় র্যাফে ড্র’র মাধ্যমে সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়া চলত। এ উত্সবে উপস্থিত তরুণীরা তাদের নামাংকিত কাগজের স্লিপ জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে ফেলত। সেখান থেকে যুবকের তোলা স্লিপের তরুণীকে কাছে ডেকে নিত। কখনও এ জুটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী হতো এবং ভালোবাসার সিঁড়ি বেয়ে বিয়েতে গড়াতো ওই সম্পর্ক। ঐ দিনের শোক গাঁথায় আজকের এই ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’। এমন অনেক প্রচলিত ঘটনা, তথ্য-উপাত্ত
পাওয়া যায় ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস নিয়ে। একেকজন একেকভাবে এর যুক্তি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইনস ডে আসল যেভাবে ।
১৯৯৩ সালের দিকে বাংলাদেশে বিশ্ব ভালবাসা দিবসের আর্বিভাব ঘঠে। যায় যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রহমান। তিনি পড়াশোনা করেছেন লন্ডনে। পাশ্চাত্যের ছোঁয়া নিয়ে দেশে এসে লন্ডনী সংস্কৃতির প্র্যাকটিস শুরু করেন। তিনি প্রথম যায় যায় দিন পত্রিকার মাধ্যমে বিশ্ব ভালবাসা দিবস বাংলাদেশীদের কাছে তুলে ধরেন। তেজগাঁওয়ে তার পত্রিকা অফিসে কেউ চাকরী নিতে গেলে না কি সাথে তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে যেতে হতো। প্রেমের যুগললবন্দী কপোত- কপোতীকে দেখে ওনি না কি খুব খুশী হতেন। অভিধা প্রথম ব্যবহার করেন শফিক রেহমান। এজন্য শফিক রেহমানকে বাংলাদেশে ভালবাসা দিবসের জনক বলা হয়।
এবার, মুসলিম সমাজের বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন। এ দিবসটি পালন করা আমাদের জন্য আদৌ কি বৈধ?
প্লীজ, ভাবুন!
চিন্তা করুন!
আমার আপনার মা ভাই বোনকে সাবধান করুন! বিরত রাখুন।
মুফতি রুহুল আমীন শাহার সুনামগন্জী